সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে রেখে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (তদন্ত) আইন ২০১৬’-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধানের দায়বদ্ধতা থেকে এই আইন করা হচ্ছে। মূলত বিচারপতিদের অসদাচরণ ও অসামর্থ্যের বিষয়টি আইনে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তার তদন্ত হবে এই আইনের মাধ্যমে। তদন্তে কোনো বিচারকের অসদাচরণ বা অসামর্থ্য প্রমাণিত হলে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হবে। এরপর সংসদের দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটে যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে, সেটি যাবে রাষ্ট্রপতির কাছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করলে খসড়া আইনে দুই বছরের জেল ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিচারপতিদের যেন কোনো অসম্মান না হয়- সেই সুরক্ষা আইনে নিশ্চিত করা হয়েছে।
সচিব বলেন, বিচারপতিদের সাথে আলোচনার সুযোগ রয়েছে, এরপর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আইনটি মন্ত্রিসভায় আসবে।
১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা ছিলো সংসদের হাতে। ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে ৯৬ (২) অনুচ্ছেদ সংশোধন করে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের পরিবর্তে সরাসরি রাষ্ট্রপতির হাতে দিয়ে দেয়া হয়। আর আইন-সংক্রান্ত ৯৬ (৩) অনুচ্ছেদটি বিলুপ্ত করা হয়। ২০১২ সালে তৎকালীন স্পিকার ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের একটি রুলিংকে কেন্দ্র করে কয়েকজন সংসদ সদস্য হাইকোর্টের একজন বিচারপতিকে অপসারণের দাবি তোলেন। সে সময়ই বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনার দাবি জোরালো হয়।